মেহেদী হাসান জুয়েল||
একের পর এক গ্রেফতারি পরোয়ানা ভুক্ত পলাতক আসামিদের গ্রেফতার করে চমক দেখাচ্ছে লালমনিরহাটের আদিতমারী থানা পুলিশ।
গত ২ ফেব্রুয়ারী দীর্ঘ ২২ বছর পর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার করে কৃতিত্ব দেখিয়েছে আদিতমারী থানা পুলিশ। এবার ৬ দিনের ব্যবধানে ৩টি মামলার সাজা সহ মোট ২২ মামলার ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামিকে গ্রেফতার করে আবারো চমক দেখালো আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মোজাম্মেল হক সহ থানার সংশ্লিষ্ট পুলিশ টিম।
গ্রেফতারকৃত আসামির নাম মোঃ আব্দুস সাত্তার শাহীন পিতা,মোঃ আবু তাহের, সাং ভেটেশ্বর কুমড়িহাট,কমলাবাড়ি ইউনিয়ন,আদিতমারী।
বুধবার বিকেলে আদিতমারী থানা থেকে এক প্রেস রিলিজে জানানো হয়, আদিতমারী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ মোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে ঢাকা গাজীপুর সহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার ও বিভিন্ন গোপন সংবাদের মাধ্যমে ভালুকা পৌরসভা এলাকা থেকে ভালুকা মডেল থানা পুলিশ ময়মনসিংহের সহযোগিতায় ০৮.০২.২০২২ তারিখ রাত আনুমানিক ২১.৩০ ঘটিকার সময় এস আই জয়নাল আবেদিন তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
জানা যায়, আসামী আব্দুস সাত্তার শাহীনের বিরুদ্ধে যুগ্ন দায়রা জজ ২য় আদালত, দিনাজপুর দায়রা নং-২২৫৮/১৮ মামলায় এক বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড ও ৮,৪৭,০০০/-টাকা অর্থদন্ড এবং বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, নোয়াখালী সিআর নং-৩২৬/০৯ মামলায় এক বছরের সশ্রম কারাদন্ড সহ ২,০০০/- টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ১৫(পনের) দিন বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং সিআর-২৮/১৬(আশুগঞ্জ), সংক্রান্তে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালত এক বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন।
এসব মামলা ছাড়াও তার বিরুদ্ধে নারায়নগঞ্জ, নীলফামারী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিরাজগঞ্জ, শেরপুর, চট্রগ্রাম, ঢাকা, চুয়াডাঙ্গা সহ বিভিন্ন জেলার বিজ্ঞ আদালতে পেনাল কোড-১৮৬০ এর ৪০৮ ধারা তথা অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ করে টাকা আত্মসাৎ সহ দি নেগোসিয়েবল ইন্সট্রুমেন্ট অ্যাক্ট-১৮৮১ এর ১৩৮ ধারায় চেক ডিজঅনারের ১৯(ঊনিশ) টি মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানা সমূহ ইস্যু করা হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, আসামী আব্দুস সাত্তার শাহীন গ্রামো ফার্মাসিউটিক্যালস, গ্রামো ফিড লিমিটেড, প্রিমিয়াম ফিড লিমিটেড নামে বিভিন্ন কোম্পানী খুলে দেশের বিভিন্ন এলাকার লোকজনের নিকট মালামাল/অর্থ গ্রহণ করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে আসছিল। ২০১১ সালের ০৯ মার্চ র্যাব, ওষুধ প্রশাসন, জেলা প্রশাসন, বিএসটিআই যৌথভাবে আসামী আব্দুস সাত্তার শাহীনের গ্রামো ফার্মাসিউটিক্যাল নামের উক্ত অনুমোদনহীন ওষুধ কোম্পানী গাজীপুরে অভিযান পরিচালনা করে বিপুল পরিমান অবৈধ এনার্জি ড্রিঙ্ক, সিরাপ, ভিটামিন ক্যাপসুল ধ্বংস করে এবং কারখানার মহাব্যবস্থাপক কবির আহম্মেদ, হিসাবরক্ষক শিব্বির আহম্মেদকে আটক করে ৩০(ত্রিশ) হাজার টাকা জরিমানা ও কারখানাটি সিলগালা করে দেয়। সেই সময় আসামী আব্দুস সাত্তার শাহীন পালিয়ে যায়। তারপর থেকে আসামী আব্দুস সাত্তার শাহীন বিভিন্ন নাম পরিচয় ও বিভিন্ন ঠিকানা ব্যবহার করে আত্মগোপনে ছিল।
এ ব্যাপারে আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মোজাম্মেল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘গ্রেফতারকৃত আসামী আব্দুস সাত্তার শাহীন কে লালমনিরহাট কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’